কাবুলের রাজপথে কে এই রহস্যময়ী

Share Button

9jbt94lz

স্টাফ রিপোর্টার: ১৪ ডিসেম্বর, ২০১৪।

সম্প্রতি কাবুলের রাস্তা দিয়ে হাঁটার সময় চমকে উঠেছিলেন সাংবাদিক হায়াত ইনসাফি। সম্পূর্ণ পাশ্চাত্য পোশাকে হেঁটে যাচ্ছেন এক আফগান নারী। বোরখা পরা তো দূরের কথা- স্কার্টের ছোট ঝুলের নিচ দিয়ে নজরে কাড়ছে তার হাঁটু অব্দি অনাবৃত সফেদ পা দু খানি। আফগানিস্তানের মত এই রক্ষণশীল সমাজে কে এই সাহসী মেয়ে-যে এরকম পোশাকে জনাকীর্ণ শহরে ঘুরে বেড়াতে পারে? ওই সাংবাদিক দ্রুত মেয়েটির কিছু ছবি তুলে রাখেন নিজের ক্যামেরায়। এরপর কথা বলার জন্য ছুটে যান তার কাছে। কিন্তু তাকে আলাপের কোনো সুযোগ না দিয়েই দ্রুত পায়ে চোখের আড়ালে চলে যায় ওই অপরিচিতা।

নিজের এই অভিজ্ঞতা সম্পর্কে হায়াত ইনসাফি বিবিসি ট্রেডিং’কে বলেন,‘আমি মেয়েটির অনুমতি না নিয়েই ছবিগুলো তুলেছিলাম। কেননা কাবুলের সড়কে আধুনিক পোশাক পরা কোনো মেয়েকে এত স্বাধীনভাবে ঘুরে বেড়ানোর দৃশ্য হয়ত আর কখনো দেখার সৌভাগ্য হবে না। শুধু আমি নই ,ওই মেয়েকে দেখে সেদিক গোটা কাবুল চমকে উঠেছিল।’

ছবিগুলো তিনি দ্রুত সোসাল মিডিয়ায় শেয়ার করে দেন। এগুলো নিয়ে কাবুলে ফেসবুক ইউজারদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। কেউ এতে ক্ষোভ প্রকাশ করলেও অনেকেই কিন্তু ওই মেয়ের সাহসের তারিফ করেছেন। তাকে সমর্থনও করেছেন বহু মানুষ।

আগেই বলেছি,আফগানিস্তানের মত রক্ষণশীণ সমাজে নারীদের কঠোর পর্দা করতে হয়। সেখানে পাশ্চাত্য পোশাক তো দূরের, সাধারণ পোশাকেও বোরখা ছাড়া নারীদের ঘরের বাইরে যাওয়ার নিয়ম নেই। অথচ কয়েক দশক আগে বিশেষ করে ৬০ ও ৭০য়ের দশকে সেখানকার নারীরা বোরখা ছাড়াই চলাফেরা করতে পারতেন। অনেক মেয়েকে তখন শর্ট স্কার্ট পরতেও দেখা গেছে।

কিন্তু তালেবান যুগ শুরু হওয়ার পর দেশটির সব কিছু পাল্টে যায়। ছিনতাই হয়ে যায় নারীদের স্বাধীনভাবে চলাফেরার অধিকারটুকু। ২০০১ সালে মার্কিন নেতৃত্বাধীন বাহিনী তালেবানদের ক্ষমতাচ্যূত করার পরও নারীদের অবস্থার তেমন কোনো হেরফের হয়নি। যদিও তাদের শিক্ষাসহ বেশ কিছু অধিকার রাষ্ট্রীয়ভাবে স্বীকার করে নেয়া হয়েছে। 3coou8hb কাবুলের রাজপথে কে এই রহস্যময়ী? (ভিডিও)কাবুলের ওই আধুনিকা নারীর ছবি দেখে সিদিক নামের এক ফেসবুক ইউজারের মন্তব্য,‘তার সাহসকে সালাম। আমরা এ রকম আরো অনেক সাহসী নারীকে দেখতে চাই।’ অন্য এক ইউজার লিখেজেন,‘শরীর আমার সিদ্ধান্ত আমার। দয়া করে আমাকে হিজাব পড়তে বাধ্য করবেন না।’ কেউ কেউ অবশ্য মেয়েটির সমালোচনাও করেছেন।

বিবিসি সাংবাদিক সৈয়দ আনোয়ার জানিয়েছেন, হায়াতের ফেসবুকে পোস্ট করা ছবিগুলোতে মন্তব্য করেছেন হাজার হাজার মানুষ। এগুলো শেয়ারও করেছেন বহু ইউজার। তিনি আরো বলেন,‘শুধু ফেসবুক নয়, কাবুলের পথচারীরাও তাকে নিয়ে আলোচনা করেছিল। তাদের ধারণা, হয় এই নারী মানসিকভাবে অসুস্থ, নয়ত শুধু প্রতিবাদ জানাতেই এভাবে রাস্তায় বেরিয়ে এসেছিলেন।’

সে যাই হইক, কাবুলের ওই রহস্যময়ীকে নিয়ে এখনো কৌতূহল দেখাচ্ছেনন অনেকেই। তার পরিচয় জানতে উদগ্রিব বহু ইউজার। অনেকের প্রশ্ন, এ রকম অন্য কোনো সাহসী নারীকে আর কখনো দেখা যাবে কি কাবুলের রাস্তায়? কে জানে!