শাহপরীর দ্বীপ সীমান্তে গোলার বিকট শব্দ, এলাকায় আতঙ্ক

Share Button

রিপোর্টার:-দৈনিক মুক্তকন্ঠ,
২৮ সেপ্টেম্বর. ২০২২। সময : ১০ ,০০.PM.

কক্সবাজারের টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপে বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তের ওপারের গোলার শব্দ এপারে শোনা যাচ্ছে। আজ বুধবার বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত প্রায় ১০-১২ বার এই শব্দ শোনা যায়। এতে স্থানীয় বাসিন্দাদের মাঝে আতঙ্ক দেখা দেয়। সীমান্তের বাসিন্দারা বলছেন, এই শব্দ মর্টার শেলের হতে পারে।

বিষয়টি সমকালকে নিশ্চিত করেছেন টেকনাফ-২ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল শেখ খালিদ মোহাম্মদ ইফতেখার।

তিনি বলেন, ‘মিয়ানমারের ভেতরে সীমান্ত এলাকায় অভ্যন্তরীণ সংঘর্ষ চলছে। ফলে এপারে মাঝেমধ্যে গোলার শব্দ পাওয়া যায়। বিজিবি সতর্ক অবস্থানে আছে। বিশেষ করে সীমান্তের বাসিন্দারা যাতে ভয়ভীতির মধ্যে না থাকে সে ব্যাপারে কাজ করে যাচ্ছে। অবৈধ অনুপ্রবেশ রোধেও সর্তক অবস্থানে আছে বিজিবি।’

এছাড়া বুধবার বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত টেকনাফের সাবরাং ইউনিয়নের নাজির পাড়া থেকে শাহপরীর দ্বীপ সীমান্ত এলাকায় বসবাসকারীরা ভারী অস্ত্রের গুলির শব্দ পেয়েছেন বলে জানান। নাফ নদ ও সমুদ্রঘেরা এই ইউনিয়নে লক্ষাধিক মানুষের বাস। তাদের একটি বড় অংশ নাফ নদের তীরবর্তী এলাকায় থাকেন।

সীমান্তের বাসিন্দারা জানান, টেকনাফের নাজির পাড়া ও শাহপরীর দ্বীপের ওপারে মিয়ানমারের পাতংজা পাড়া ও মগ্নি পাড়ার অবস্থান। বিকেলে সেখানে গোলাগুলি হয়েছে। যার শব্দ শুনতে পাওয়া গেছে। এমন পরিস্থিতিতে সীমান্তের বাসিন্দারা আশংকা করছেন, আবারও রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের ঢল নামতে পারে। কারণ, ২০১৭ সালে ২৫ আগস্ট রোহিঙ্গা একটি বড় অংশ এই এলাকা দিয়ে অনুপ্রবেশ করেছিল।

সীমান্তের নাজির পাড়ার বাসিন্দা মো. এনাম বলেন, ‘সীমান্তের ওপারে মিয়ানমার থেকে গুলির শব্দ পাওয়া গেছে। সীমান্তে আমাদের বিজিবি টহলে আছে। সাধারণ মানুষকে আতংকিত না হতে বলা হয়েছে।’

শাহপরীর দ্বীপে নাফ নদের তীরের বাসিন্দা আবুল কালাম বলেন, ‘বিকেলে নাফ নদের বেড়িবাঁধে বসেছিলাম। হঠাৎ মিয়ানমার সীমান্তে বিকট গুলির শব্দ শুনতে পাই। নারী-শিশুরা ভয়ে ঘর থেকে বেরিয়ে এসেছিল। পরে বুঝতে পারি ওপারে সংঘর্ষের শব্দ এপারে পাওয়া যাচ্ছে। অন্তত ১০-১২ বার শব্দ শোনা গেছে। এখানকার লোকজন বলাবলি করছে, আবারও রোহিঙ্গাদের ঢল নামতে পারে।’

তবে নতুন করে কোনো রোহিঙ্গা ঢুকতে দেওয়া হবে না উল্লেখ করে টেকনাফ উপজেলার ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী কর্মকর্তা এরফানুল হক চৌধুরী বলেন, ‘সীমান্তের কাছে যেসব এলাকায় গোলাগুলির শব্দ পাওয়া যাচ্ছে সেখানকার বাসিন্দাদের খোঁজ-খবর রাখছি। পাশাপাশি বাসিন্দাদের তালিকা তৈরি করছি। যাতে পরিস্থিতি বুঝে ব্যবস্থা নেওয়া সহজ হয়।’

শাহপরীর দ্বীপ ইউপি সদস্য আবদুস সালাম বলেন, ‘বিকেলে এলাকার লোকজন বিকট শব্দ শুনেছেন। বিষয়টি সংশ্লিষ্টদের অবহিত করেছি।’

গত দেড় মাস ধরে তুমব্রু সীমান্তে মর্টারশেল ও গোলাগুলির শব্দ পাওয়া যাচ্ছিল মিয়ানমার থেকে। তবে গত দুই দিন বড় ধরনের গোলাগুলির শব্দ বন্ধ ছিল বলে জানান ঘুমধুম ইউনিয়নের ইউপি সদস্য মো. আলম।