চুরি না করেও ওরা চোর!

Share Button

রিপোর্ট:-দৈনিক মুক্তকন্ঠ,
২৬ আগষ্ট, ২০১৮। সময়:০৮,২০,PM

উদ্দেশ্যমূলকভাবে সমাজে হেয়প্রতিপন্ন করতে কুয়াকাটার দুই জেলেকে প্রতিহিংসামূলকভাবে চোর সাজানোর অভিযোগ উঠেছে। এমন অপচেষ্টার ফলে তাদের ছেলেমেয়েরা স্কুল-মাদ্রাসায় যেতে পারছে না। রোববার কুয়াকাটা প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগী জেলে মো. সরোয়ার গাজী ও নজরুল ইসলাম শরীফ লিখিত বক্তব্যে এমনটাই দাবি করেছেন।

লিখিত বক্তব্যে ওই দুই জেলে জানান, মৎস্যবন্দর আলীপুর বাজার ব্যবসায়ী ও ট্রলারমালিক রাজা মোল্লার নির্দেশে গত ৫ আগস্ট রাত সাড়ে ৮টার দিকে কুয়াকাটা পৌরসভার ৪নং ওয়ার্ডের খুরমাতলা এলাকায় অপর জেলে মামুন ঘরামীকে আনতে যান।

মামুন ঘরামীসহ তারা রাস্তায় দাঁড়িয়ে কথা বলার সময় স্থানীয় বাসিন্দা রিয়াজ কাজী, ছলেমান গাজী, রুহুল আমিন মোল্লা তাদের তিন জেলেকে চোর সন্দেহে মারধর করে স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর সাগর মোল্লার বাড়িতে নিয়ে যান।

সাগর মোল্লা সরোয়ার গাজী ও নজরুল ইসলামকে মারধর করে পুলিশে দেয় এবং মামুন ঘরামীকে ছেড়ে দেয়। পরবর্তীতে পুলিশ তাদের আদালতে প্রেরণ করেন।

লিখিত বক্তব্যে তারা দাবি করেন, মামুন ঘরামী কাউন্সিলর সাগর মোল্লার অনুসারী বিধায় তাকে ছেড়ে দেয়া হয় এবং সরোয়ার গাজী তার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের অনুসারী হওয়ায় উদ্দেশ্যমূলকভাবে তাকে পুলিশে দেয়া হয়।

জেলে নজরুল ইসলামের সঙ্গে ওই ওয়ার্ডের আওয়ামী লীগ নেতা ইউসুফ গাজীর ব্যক্তিগত বিরোধের জেরে চোর সাজিয়ে সামাজিকভাবে হেয়প্রতিপন্ন করা হয় বলেও তাদের দাবি।

তারা আরও বলেন, চোর না হয়েও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকসহ বিভিন্ন প্রচার মাধ্যমে মিথ্যা প্রচার চালিয়ে সম্মানহানি করে তারা।

এসময় জেলে নজরুল ইসলাম শরীফ বলেন, আমার ছেলে মনির শরীফ কুয়াকাটা দাখিল মাদ্রাসার নবম শ্রেণির ছাত্র। মনির শরীফ এ ঘটনার পর থেকে মাদ্রায়ার যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছে। আমার ছেলে লেখাপড়া বন্ধ হয়ে গেছে। আমি এর বিচার চাই।

অপর জেলে সরোয়ার গাজী বলেন, এ ঘটনার পর থেকে আমার ছেলেমেয়েরা স্কুলে যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছে। স্কুলে গেলে তারা সহপাঠিদের দ্বারা বঞ্চনার শিকার হচ্ছে।

এ বিষয়ে ট্রলারমালিক রাজা বলেন, ওই দুই জেলে দীর্ঘদিন আমার ট্রলারে সমুদ্রে মাছ শিকার করে আসছে। দাদনের টাকা দিয়ে মামুন ঘরামীকে আনতে পাঠিয়েছিলাম। নজরুল ও সরোয়ার কেউই চোর না, তাদেরকে চোর সাজানো হয়েছে।

কাউন্সিলর সাগর মোল্লা বলেন, স্থানীয় লোকজন তাদেরকে চোর সন্দেহ করে আমার বাসায় নিসে আসেন। আমি কোনো অভিভাবক না পেয়ে পুলিশের নিকট হস্তান্তর করি। মামুন ঘরামীকে নিয়ে যাওয়ার সময় তার বাবার সঙ্গে দেখা হওয়ায় তাকে তার বাবার হাতে তুলে দিয়েছি।

কুয়াকাটা পৌর মেয়র আ. বারেক মোল্লা বলেন, ওই দুই জেলেকে চোর সন্দেহে পুলিশে দেয়া হয়েছিল। আসলে ওরা চোর না, পরিস্থিতির শিকার।